করোনা ভাইরাস মহামারীর কারণে এক বছরের ও অধিক সময় ধরে দেশব্যাপী সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে আছে। এখনো করোনার প্রকোপ কমেনি। এই পরিস্থিতিতেই টিউশন ফি ও ফরম ফিলাপ বাবদ প্রায় ৬০ হাজার টাকা নিচ্ছে চট্রগ্রামের সাউথপয়েন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজ।
আর কেউ এই ৬০ হাজার টাকা পরিশোধ না করলে এসএসসির ফরম পূরণ করতে দেয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করে স্কুলের শিক্ষার্থীরা।
সম্প্রতি চট্রগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে এই অভিযোগ জানিয়েছেন স্কুলের মেহেরুন নেছা আইরিন নামের এক এসএসসি পরীক্ষার্থীর অভিভাবক।
আইয়ূব রাজা নামের ওই অভিভাবক দাবি করেন, তার মেয়ে চট্রগ্রাম সাউথপয়েন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজ এর একজন নিয়মিত শিক্ষার্থী। ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত বিনা বেতনে অধ্যয়ন করেছে সে। ২০২০ সালে সে ১০ম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হলেও করোনা মহামারীর কারণে দেশব্যাপী সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করার নির্দেশ দেয় সরকার।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টিউশন ফি আদায় করে। ২০২০ শিক্ষার্ষের টিউশন ফি ও অন্যান্য ফি বাবদ ৫৭ হাজার ৮ শত টাকা এবং ফরম ফিলাপ বাবদ ২ হাজার টাকা ধার্য্য করে স্কুল কর্তৃপক্ষ, যা পরিশোধের সামর্থ্য তার নেই কিংবা কোন অস্বচ্ছল পরিবারের পক্ষেও সম্ভব নয় বলে জানান তিনি।
তিনি আরো বলেন, গত কয়েক দিন ধরে তিনি এই বিষয়ে মানবিক আবেদন করার জন্য বিদ্যালয়ে গেলেও ব্যর্থ হন। নির্ধারিত টিউশন ফি ও ফরম ফিলাপ বাবদ ৫৯ হাজার ৮০০ টাকা পরিশোদ বাধ্যতামূলক করায় আমি টিউশন ফি মওকুফের জন্য আবেদন করি। কিন্তু এতে সাড়া দেননি উক্ত বিদ্যালয়ের চেয়ারম্যান নারগিস আক্তার। তিনি ফোনে আমাকে হিসেব শাখায় যোগাযোগ করতে বলেন।
হিসেব শাখায় যোগাযোগ করলে কর্তব্যরত ব্যাক্তিরা জানান যে বকেয়া মওকুফের সুযোগ নেই। ফরম ফিলাপ করতে চাইলে প্রয়োজনে অর্ধেক ক্যাশ এবং অর্ধেক চেক জমা দিতে হবে। আমি নিরুপায় হয়ে চট্রগ্রাম বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত আবেদন করেছি। তাছাড়া শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষা উপমন্ত্রী৷ শিক্ষা সচিব, জেলা প্রশাসককে অনুলিপি দিয়েছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাউথপয়েন্ট স্কুল এন্ড কলেজর চেয়ারম্যান নারগিস আক্তার সাংবাদিকদের বলেন, মেহেরুন নেছা আইরিন (শিক্ষার্থী) আমার প্রতিষ্ঠানে ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে অধ্যয়নরত। মেধাবী হিসেবে সে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত বিনা বেতন পড়ার সুযোগ পেয়েছে।
করোনার বন্ধেও অনলাইনে আমাদের শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত ছিল এবং আছে। আর টিউশন ফি ছাড়া একটি প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করা কঠিন। আমরা অভিভাবকদের সাথে আলোচনাক্রমে টিউশন ফি পরিশোধে সুযোগ-সুবিধা দিয়ে থাকি।
এই শিক্ষার্থীর অভিভাবক বকেয়া টিউশন ফি পরিশোধে আমাদের পরামর্শ না মেনে এককভাবে পুরো টিউশন ফি পরিশোধে অপারগতা প্রকাশ করেছে! তার মানবিক বিষয়টি বিবেচনা করে নগদ ও বকেয়ায় টিউশন ফি পরিশোধ করে ফরম ফিলাপ করতে বলেছিলাম। কিন্তু তিনি তা না করে কোথাও অভিযোগ করা ঠিক হয়নি।